May be an image of 10 people, ambulance, hospital and text


ছবি : ছবির সকল অধিকার সংরক্ষণ করে Affixin Media Online

ধৈর্য সৌভাগ্যের প্রতীক। ধৈর্যহীন ব্যক্তি আলোহীন মশালের মতো। ধৈর্য জন্মগত কিংবা পৈতৃক সূত্রে পাওয়া কোনো কিছু নয়। কেউ যদি নিজেকে ধৈর্যশীল বান্দা হিসেবে গড়ে তুলতে চায়, তাহলে তার জন্য সম্ভব।


যেভাবে ধৈর্যের চর্চা করব

১. আল্লাহর একচ্ছত্র ইচ্ছা : এ কথা বিশ্বাস করা যে সব কিছুর রাজত্ব একমাত্র আল্লাহর। ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি যা চান তা-ই করতে পারেন। তাঁর কোনো কাজের ওপর প্রশ্ন করার কারো কোনো অধিকার নেই।’ আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি যা করেন সে বিষয়ে তিনি জিজ্ঞাসিত হবেন না; বরং তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে।


’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ২৩)
২. মানুষের সব কিছু লিপিবদ্ধ : সব বিষয় আল্লাহর কাছে লিপিবদ্ধ আছে। আমার কখন কোন মুসিবত আসবে তা আল্লাহর কাছে লিপিবদ্ধ আছে। অসুস্থতা, দারিদ্র্য, দুঃখ-বেদনা, যাবতীয় কল্যাণ-অকল্যাণ—সব কিছু আল্লাহর কাছে লিপিবদ্ধ আছে, এ ধারণা একজন মুমিনের সর্বদাই পোষণ করা। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যদি সব উম্মত তোমার কোনো উপকারের উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলে ততটুকু উপকার করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা তোমার জন্য লিখে রেখেছেন।


অন্যদিকে যদি সব উম্মত তোমার কোনো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে একতাবদ্ধ হয়, তাহলে ততটুকু ক্ষতি করতে সক্ষম হবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা তোমার তাকদিরে লিখে রেখেছেন। কলম তুলে নেওয়া হয়েছে এবং লিখিত কাগজও শুকিয়ে গেছে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৫১৬)
৩. পার্থিব জীবন সবার জন্য পরীক্ষা : এ কথা বিশ্বাস করা যে পৃথিবীতে যত মানুষ এসেছে কেউই আপদমুক্ত নয়। ছোট-বড় বিপদ-আপদে সবাই আক্রান্ত হয়েছে। এ দুনিয়া বিপদের জায়গা।


তাই এমন ধারণা পোষণ করা যে আমার কোনো ধরনের বিপদ-আপদ আসবে না, তা চরম ভুল। বরং এর মধ্যে বেঁচে থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা কখনো কখনো পরীক্ষার জন্য বিপদ দিয়ে থাকেন, আবার গুনাহ মাফ করার জন্য বিপদ দিয়ে থাকেন, বান্দাকে আরো আল্লাহর নিকটবর্তী করে তোলার জন্য বিপদ দিয়ে থাকেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মানুষ কি মনে করেছে যে আমরা ঈমান এনেছি—এ কথা বললে তাদের পরীক্ষা না করে অব্যাহতি দেওয়া হবে?’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ২-৩)
৪. বিপদ মানুষকে আল্লাহমুখী করে : বান্দা যেন বিপদে পড়ে আল্লাহর কাছে ফিরে আসে, সে জন্য আল্লাহ বান্দাকে ছোট-বড় বিপদ দিয়ে থাকেন—এই বিশ্বাস স্থাপন করা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা তাদের ওপর বিপদ এলে বলে, আমরা তো আল্লাহরই। আর নিশ্চয়ই আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৫৬)

৫. মানুষের জন্য কল্যাণ প্রার্থনা : বান্দার জানা নেই তার জন্য কোনটা কল্যাণকর আর কোনটা অকল্যাণকর। তাই কখনো কখনো বিপদ তার জন্য আশীর্বাদ নিয়ে আসে। আল্লাহ তাআলা কোরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তোমরা যা অপছন্দ করো হতে পারে তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর এবং যা ভালোবাসো, হতে পারে তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ জানেন তোমরা জানো না।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২১৬)

৬. বিপদে ধৈর্য ধারণের প্রতিদান : এ কথা চিন্তা করা যে দুনিয়া কারো স্থায়ী জায়গা নয়, বরং এটি একটি স্টেশনের মতো। তাই ছোট ছোট মুসিবতের ওপর যদি ধৈর্য ধারণ করি, তাহলে আল্লাহ তাআলা এর জন্য অনেক বড় বিনিময় দান করবেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, দুনিয়া মুমিনের জন্য কয়েদখানা এবং কাফিরের জন্য জান্নাততুল্য। (মুসলিম, হাদিস : ৭৩০৭ )

By Rakin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *